ব্রণ হল ত্বকের সবচেয়ে প্রচলিত সমস্যার মধ্যে একটি, যা ৮৫% এরও বেশি কিশোর-কিশোরীদের প্রভাবিত করে। এটি সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে শুরু হয় এবং ব্যক্তির ২০ বছর বয়সে পৌঁছানোর সাথে সাথে ধীরে ধীরে সমাধান হয়, যদিও কারো কারো ৪০ এবং ৫০ বছর বয়স অবধি ব্রণ থাকে। মৃদু থেকে মাঝারি ব্রণের যত্নের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হলো ট্রপিকাল থেরাপি।
রেটিনয়েড এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল যেমন বেনজয়েল পারক্সাইড এবং অ্যান্টিবায়োটিক হলো সাময়িক ব্রণ থেরাপির প্রধান চিকিৎসা।বেনজয়েল পারক্সাইড ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে এবং অতিরিক্ত তেল সরিয়ে দেয়।
এই ধরনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রধান পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো ব্রণের স্থানে জ্বালাপোড়া। ব্রণের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত জেল, প্লেজেট (ওষুধে ভেজানো প্যাড), ওয়াশ এবং দ্রবণগুলি ত্বক শুষ্ককারি এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য দারুণ সহায়ক। ত্বকের শুষ্কতা ও জ্বালাপোড়ার জন্য লোশন, ক্রিম এবং মলম ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্রণের চিকিৎসার ফল পেতে বা ত্বকের উন্নতি দেখতে অন্তত ছয় থেকে আট সপ্তাহের প্রয়োজন হয়; প্রয়োজন হিসাবে ব্যবহারযোগ্য উপলভ্য ট্রপিকাল এজেন্ট হল বেনজয়াইল পারক্সাইড, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যাজেলেইক অ্যাসিড বা রেটিনয়েড।
ওরাল কর্টিকোস্টেরয়েড
টপিকাল রেটিনয়েড (অ্যাডাপালিন, ট্যাজারোটিন, ট্রেটিনোইন)|
রেটিনয়েডস ব্রণ চিকিৎসার প্রধান লক্ষ্য মাইক্রোকমেডোন। ট্রপিকাল রেটিনয়েড থেরাপি ফলিকুলার কেরাটিনোসাইটের উপর কাজ করে অত্যাধিক কর্নিফিকেশন এবং ফলিকুলার ব্লকেজ প্রতিরোধ করতে। এটি প্রো-ইনফ্ল্যামেটরি সাইটোকাইনের মুক্তিও কমাতে পারে। এই ধরনের থেরাপি কমেডোন এবং প্রদাহজনক ক্ষতের সংখ্যা ৪০% থেকে ৭০% হ্রাস করে। আইসোট্রেটিনোইন স্কিনে অতিরিক্ত তেল উৎপন্ন হওয়া রোধ করে।
ব্রণের চিকিৎসায় ও প্রাথমিক অবস্থায় দাগ দূর করতে অ্যাডাপালিন জেল ০.১% অত্যন্ত কার্যকর।অ্যাডাপালিন (ডিফারিন) ত্বকের উপরিভাগের নিচে ব্রণ তৈরি হওয়া বন্ধ করে।
এক গবেষণায় ১২-সপ্তাহের র্যান্ডমাইজড নিয়ন্ত্রিত ট্রায়ালে ২৪৯ জন মৃদু থেকে মাঝারি ব্রণ সহ রোগীর চিকিৎসায় অ্যাডাপালিন জেল ০.১% এবং ক্লিন্ডামাইসিন ১.০% ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া গেছে যা হয়েছে একা ক্লিন্ডামাইসিন ১.০% ব্যবহার করার চেয়ে অনেক ফলপ্রসূ।
হারবাল চিকিৎসা/থেরাপি
ব্রণের চিকিৎসার জন্য স্যালিসাইলিক এসিড জাতীয় ও টি ট্রি অয়েল বা তেল সমৃদ্ধ ফেসওয়াশ ব্যবহার করা উচিত। স্যালিসিলিক অ্যাসিড পোর ক্লগ হওয়া রোধ করে। কেউ কেউ তাদের ব্রণের যত্নের জন্য টি ট্রি অয়েল বা তেল (এটি বেনজয়াইল পারক্সাইডের মতো কাজ করে, কিন্তু ধীরে ধীরে) বা আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (মৃত ত্বক অপসারণ করে এবং পোর খুলে দেয়) বা সালফার এর মতো হারবাল বা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে। সালফার মৃত ত্বকের কোষ দূর করে।
ব্রণের চিকিৎসার ক্ষেত্রে দাগ দূর করতে ও নতুন ব্রণ উঠা প্রতিরোধ করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার অত্যাবশ্যক।
হরমোনাল থেরাপি
হরমোন এজেন্ট অন্তর্নিহিত হরমোনজনিত অস্বাভাবিকতা বা নির্বিশেষে ব্রণ সহ সকল মহিলাদের ক্ষেত্রে কার্যকর সেকেন্ড লাইন ট্রিটমেন্ট বা চিকিৎসা প্রদান করে।
এছাড়া, আরো আধুনিক চিকিৎসায় বর্তমানে রয়েছে,
লেজার থেরাপী,
ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে কেমিক্যাল পিল
বড় সিস্টের (যা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায় না ) অস্ত্রোপচার/অপসারণ
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি কর্টিসোন সহ সিস্ট ইনজেকশন
ব্রণের চিকিৎসায় কিছু নিয়মকানুন মেনে চলা উচিত যা ব্রণ প্রতিরোধে সহায়ক:

সাদা কার্বোহাইড্রেট, চিনি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা
প্রচুর শাকসবজি, ফলমূল, ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
প্রচুর পানি পান করা
ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড আর খাবার পরিহার করা
চা,কফি ইত্যাদি ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় গ্রহণ না করা বা সীমিত আকারে গ্রহণ করা
সময়মতো ঘুমাতে যাওয়া, রাত না জাগা এবং প্রতিদিন ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানো
স্ট্রেস ফ্রি আর টেনশন ফ্রি থাকা এজন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম, ইয়োগা বা মেডিটেশন করা
ত্বক সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা
তৈলাক্ত মেকআপ, সানস্ক্রিন বা চুলের পণ্য ব্যবহার করবেন না।
অত্যধিক সাময়িক ব্রণের ওষুধ ব্যবহার করবেন না — সমস্যাযুক্ত জায়গাগুলি কভার করার জন্য যথেষ্ট প্রয়োগ করুন।
আপনার পিম্পল পিক করবেন না বা চেপে ধরবেন না।
আপনার চুল, হাত এবং ফোন আপনার মুখ থেকে দূরে রাখুন।
Kulsuma Bahar Bethi
B.Sc in Nutrition and Food Science,
INFS, University of Dhaka
Content Writer – 20 Minute Medical (Department of Health Content Writing)