★শীতে শিশুর ব্রংকিওলাইটিস★

শীতে শিশুর ব্রংকিওলাইটিসঃ 

ব্রংকিওলাইটিস ভাইরাসজনিত একটি রোগ। জীবাণু হলো আরএসডি ভাইরাস। তবে ইনফ্লুয়েঞ্জা-পেরা ইনফ্লুয়েঞ্জা, এডিনো, রাইনো ও মাইকোপ্লাজমাও কখনো এই রোগ সৃষ্টি করে। বড়দের থেকে নবজাতকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। ফলে শিশুরা বেশি এ রোগে আক্রান্ত হয়। এ রোগ প্রতিরোধে পিতা-মাতার বাড়তি সর্তক থাকা প্রয়োজন।

★ব্রংকিওলাইটিস এর লক্ষণ –
প্রথমে ঠান্ডা, জ্বর, সর্দি, কাশি দিয়ে শুরু হয়। এরপর চার থেকে পাচঁ দিন পর মাথায় ব্যথা দেখা দেয়। সঙ্গে  তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তীব্রতা অনুযায়ী রোগটিকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়।

#মৃদু- বুকের দুধ বা পানীয় পান করতে পারে শ্বাসকষ্ট খুব বেশি না অক্সিজেন মাত্রা স্বাভাবিক ৯২% এর ওপরে।  
#মধ্যম: শ্বাসকষ্টের কারণে বুকের নিচের অংশ ডেবে যায় অক্সিজেন মাত্রা ৯২% এর নিচে নেমে যায়। তবে অক্সিজেন দিলে তা স্বাভাবিক হয়ে আসে।
#মারাত্মক: বুকের দুধ বা পানীয় পান করতে পারে না বুকের নিচের অংশ তীব্রভাবে ডেবে যাচ্ছে শ্বাসপ্রশ্বাসের কষ্টকর শব্দ। অক্সিজেন মাত্রা ৯২% এর নিচে এবং অক্সিজেন দিয়ে মাঝে মাঝে সুফল মেলে।

★ব্রংকিওলাইটিস প্রতিরোধে করণীয় কি ?
নবজাতককে গরম রাখার চেষ্টা করতে হবে বিশেষ করে আমাদের যেসব এলাকায় শীত পড়ে। সেসব এলাকায় শিশুদের গরম পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। যে রুমে শিশুকে রাখা হবে। সে রুমের দরজা জানালাগুলো বন্ধ রাখতে হবে। গরম কাপড় পড়িয়ে রাখতে হবে।প্রয়োজন বোধে বাচ্চাকে হাত-পায়ে মুজা ও মাথায় টুপি পরিধানের ব্যবস্থা করতে হবে।বাচ্চার শরীরের তাপমাত্র স্বাভাবিক আছে কিনা বাচ্চার পায়ে হাত দিয়ে লক্ষ করতে হবে। যদি দেখা যায় বাচ্চার পা ঠান্ডা থাকে। তাহলে বুঝতে হবে ‍শিশুর শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক নেই।

তখন অন্য উপায়ে শিশুর শরীর গরম করার ব্যবস্থা করতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে বাচ্চা কোনভাবে ঠান্ডা যেন হয়ে না যায়।
শরীর ঠান্ডা থাকলে শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। শীত কালে শুধু নবজাতক নয় বড়রাও বিভিন্ন ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। একারণে একটু বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।

তবে ব্রংকিওলাইটিস নিয়ে অতি উদ্বেগের কিছু নেই। একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর সেরে ওঠে।রোগ নির্ণয় করতে তেমন কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা লাগে না। তবে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।
কেননা এর প্রধান চিকিৎসা অক্সিজেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক লাগেনা।
শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে বা করমর্দনে রোগজীবাণু ছড়ায়। তাই আক্রান্ত শিশু থেকে অন্য শিশুদের আলাদা রাখা উচিত।
তবে মনে রাখতে হবে ব্রংকিওলাইটিস থেকে অনেক সময় মৃত্যু হতে পারে যদি সঠিক সময় অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা না যায়। তাই ব্রংকিওলাইটিস এর লক্ষণ থাকলে অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। 

নবজাতকের রোগ প্রতিরোধে মায়ের বুকের দুধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এর সাথে সাথে শিশুকে ঘরের তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে। বাহির থেকে তৈরি খাবার বাচ্চার জন্য অনেক সময় ক্ষতির কারণ হয়। একারণে পরিস্কার পরিচ্ছনতা নিশ্চিত করে ঘরে তৈরি খাবার ও বিশুদ্ধ পানি খাওয়াতে হবে।
ডা.মেহেদি হাসান এমবিবিএস,এমএস (শিশু সার্জারী)  

1 Shares:
You May Also Like
Read More

ছোট্ট শিশুর চোখের সমস্যা

ছোট্ট_শিশুর_চোখের_সমস্যাঃ Congenital_Nasolacrimal_duct_obstrucrion: ১০ দিন বয়সের শিশুটি মায়ের কোলে চড়ে চেম্বারে এসেছিলো, তার অসুবিধা ছিলো জন্মের পর থেকেই বাম…