
◾◾বর্তমানে অতি সাধারণ সমস্যার নাম হচ্ছে ইনসমনিয়া যা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। ইনসমনিয়া হল ঘুমের ব্যাঘাতজনিত সমস্যা বা ভালো ঘুম না হওয়া। সাধারণত রাতে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির একটানা ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোই হচ্ছে ভালো ঘুম বা Sound Sleep যদিও সেটা নানা ধরনের অসুবিধার(শারীরিক /মানসিক) কারণে সম্ভবপর হয়ে ওঠে না।।
মাঝে মাঝে দেখা যায় ঘুমিয়ে যাবার কিছু সময় পরেই ঘুম ভেঙে যায় এবং মাথায় নানা ধরনের দুশ্চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে। ইনসমনিয়া বর্তমানে একটি মানসিক ব্যধিতে পরিণত হচ্ছে।
◼️ইনসমনিয়ার কারণঃ
১.দুশ্চিন্তা
২.পরিমাণে বেশি খাবার খাওয়া
৩.চা,কফির আসক্তি
৪.অ্যালকোহল
৫.ধুমপান
৬.দীর্ঘদিন ঔষধ সেবন
৭.শারীরিক অসুস্থতা ও ব্যাথা
৮.গর্ভাবস্থা
৯.জীবনযাপনের ধরণ
১০.সময়মত না ঘুমানো
১১.বয়স
১২.স্নায়বিক রোগ
১৩.মানসিক সমস্যা ইত্যাদি নানা কারণেই ইনসমনিয়া হয়ে থাকে।
◼️ইনসমনিয়ার লক্ষণঃ
ইনসমনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির বেশির ভাগ সময়ই ক্লান্তি অনুভূত হয়ে থাকে। তাদের চিন্তাশক্তি ও মনোযোগ কমে যায়। বমি ভাব ও মাথা ব্যাথা হয়। তাদের ব্যবহারে পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় অর্থাৎ আচার-আচরণে পরিবর্তন দেখা দেয়। কারো শরীরে ব্যাথা থাকলে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়।
🔺এবার আসি ইনসমনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের কি খাওয়া যাবে /কি খাওয়া যাবেনা এবং সাধারণ কিছু নিয়মাবলি যা
Sleep Hygiene নামে পরিচিত 🔺
***যেসব খাওয়া যাবে ——সাধারণত তাজা শাক-সব্জি,ফলমূল, বিভিন্ন ধরনের বাদাম বিশেষ করে আখরোট,মাছ, চর্বিহীন প্রোটিন, দুধ ও টকদই, কলা, ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার যেমন মিষ্টি কুমড়ার বীজ যদি ১/২ কাপ পরিমাণে কেউ খেতে পারে তাহলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও প্রতিদিন যদি কেউ ১ কাপ পরিমাণ সবুজ রঙের শাক খেতে পারেন তাহলেও ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে এবং ভালো ঘুম হবে।
***যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে —–চা,কফি ইত্যাদি ক্যাফেইন যুক্ত খাবার, অ্যালকোহল,চিনি ও চিনি যুক্ত খাবার, অতিরিক্ত মশলা যুক্ত খাবার ও চর্বিযুক্ত খাবার।। এসব খাবার গ্রহণ করলে ঘুম জনিত সমস্যা বেড়ে যায় তাই এসব খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো।
◼️খাবার ছাড়াও ভালো ঘুমের জন্য বিশেষ কিছু দিকে লক্ষ্য রাখতে হয় যেগুলো Sleep Hygiene নামে পরিচিত যেমন ———নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো উচিত, ঘুমানোর জন্য নিরিবিলি পরিবেশ অধিক গুরুত্বপূর্ণ, বিছানা আরামদায়ক হতে হবে, বিছানা- বালিশ,চাদর সব কিছু পরিস্কার – পরিচ্ছন্ন রাখা, ঘুমানোর জন্য নির্ধারিত রুম সু্ন্দর ভাবে সাজানো- গোছানো, অযথা দুশ্চিন্তা না করা, অনেক সময় ডাক্তার প্রয়োজন অনুযায়ী কিছু ঔষধ দিয়ে থাকেন যা চিন্তামুক্ত রাখে ও ইনসমনিয়া হতে দেয়না। রাতে ঘুমানোর কমপক্ষে ২ ঘন্টা আগে খাবার খাওয়া ও ঘুমানোর আগে এক গ্লাস উষ্ণ গরম দুধ খাওয়া তবে যাদের Lactose Intolerance বা দুধ খেলে অসুবিধা হয় তাদের না খাওয়াই ভালো। সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করা।
সাদিয়া আরেফিন শীতল
নিউট্রিশনিস্ট
কন্টেন্ট রাইটার -20 Minute Medical